পূজো আসছে, এই আসার আশ্চর্য আশ্বাস গোটা জাতিটাকে মাতিয়ে রেখেছে, বছর ঘুরিয়ে যখন পূজো পুনরায় আমাদের আকাক্ষ্মার দোরগোড়ায় উপস্থিত, তখন সারা বিশ্বের বাঙালি প্রহর গুনে অতি মধুর টানে, অতি মধুর স্মৃতিছায়ায়। হাতে যখন আর মাত্র ২৫ দিনের সুমধুর অপেক্ষা, তখন বাঙালির মন যেন বসতেই চায় না, পূজোর শঙ্খধ্বনির শব্দে, ঢাকের বাদ্যির আনন্দে মন হয়ে ওঠে চঞ্চলা। শরতের রঙিন আকাশের মধ্যভাগে পেঁজা তুলোর ন্যায় মেঘরাশি বার্তা দেয়, আর দেরি নেই, মায়ের আগমন শীঘ্রই।
পূজো আসছে শুনলেই মেতে উঠে মহালয়ার ভোরের আগমনী শোনার আনন্দ, পূজো আসছে মানেই মনে ওঠে নতুন ছোয়ার আমেজ। পূজো মানেই আনন্দ, বাঙালি ও দুর্গা পূজো, অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জড়িত সেই প্রাচীনতম ইতিহাস ধারাবাহিকতা থেকেই, পূজোর কয়েক মাস আগে থাকতেই পূজো পূজো ভাব যখন মনে দোলা লাগায়, কাশ ফুলের সৌন্দর্যে গ্রামবাংলা ভাসে মনোরম প্রাকৃতিক মধুরতাএ , শিউলিফুলের পবিত্রতা যখন শারদীয়া ছোঁয়াকে দ্বিগুন করে, তখন সত্যিই মনে হয়, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ আনন্দধারায় নিজেকে সামিল করতে পেরে আমি নিজেই গর্বিত, শতগুনে আপ্লুত।
পূজোর প্রসঙ্গ আনতেই মনে ওঠে ভালোবাসার আবেগ, পূজো মাত্রেই আপামর বাঙালির কাছে মহানন্দের হিসেব রাখা, তাই যখন আর মাত্র একমাস অপেক্ষা, তখন আর মনের ভাবকে সামলানো মুশকিল বটে।মহালয়ার আগমনী সুরে, ষষ্ঠীর বোধনকালে যে মায়ের আগমন, অষ্টমীতে শিউলিফুলের স্পর্শে অঞ্জলীর প্রদান, ও দশমীতে বিষন্নভাব নিয়ে যার আবার কৈলাসযাত্রা , এই সুমধুর ক্ষনিকের আগমনীবার্তা আপামর বাঙালির কাছে আনন্দঘন, রঙ্গরসিকতার আশ্বাস মাএ।পূজো আসে, পূজো যায়, কিন্তু আমাদের জন্য রেখে যায় সৌন্দর্যের আবেগ, টুকরো গল্পের ছোয়া ও সতেজতাপূর্ণ নবজীবনের প্রতিশ্রুতি। তাই অপেক্ষায়রত বাঙালির মতো আমিও আনন্দিত মায়ের আগমনে, আমিও চিরবিলিন এই প্রাসঙ্গিকতার আহ্বানের সুরধনীতে।